মানব ইতিহাস: হযরত আদম (আ: ) থেকে শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম সবাই
- islamipedia1122
- Jan 18, 2019
- 4 min read
Updated: Feb 21, 2019
=========== এমন প্রচুর মুসলমান পাওয়া যাবে যারা মনে করে হযরত মুহাম্মদ ( দ:) এর মাধ্যমেই কেবল ইসলাম এসেছে, অর্থাৎ তিনিই ইসলামের প্রবর্তক। এই ভুল ধারনার সূত্র ধরে তারা প্রতিনিয়ত আরো অনেক ভুল ধারনা করে ফেলে। হযরত মুহাম্মদ (দ:) ইসলামের সর্বশেষ নবী। ইসলামের প্রথম নবী হচ্ছেন প্রথম মানব হযরত আদম (দ:) । পরবর্তীতে সকল নবী, রসুল গন ইসলাম ই প্রচার করে গেছেন এবং ওনাদের কে যারা মান্য করেছেন সকলেই মুসলিম। "তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মূসা, ঈসা, অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা দান করা হয়েছে, তৎসমুদয়ের উপর। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী। [ সুরা বাকারা ২:১৩৬ ]" ০০৩:৯৫সূরা আল ইমরান
"ইব্রাহীম ইহুদী ছিলেন না এবং নাসারাও ছিলেন না, কিক্তু তিনি ছিলেন ‘হানীফ’ অর্থাৎ, সব মিথ্যা ধর্মের প্রতি বিমুখ এবং আত্নসমর্পণকারী, এবং তিনি মুশরিক ছিলেন না। Ibrâhim (Abraham) was neither a Jew nor a Christian, but he was a true Muslim Hanifa (Islâmic Monotheism –... ০৩:৬৯সূরা আল ইমরান
"মানুষদের মধ্যে যারা ইব্রাহীমের অনুসরণ করেছিল, তারা, আর এই নবী এবং যারা এ নবীর প্রতি ঈমান এনেছে তারা ইব্রাহীমের ঘনিষ্ঠতম-আর আল্লাহ হচ্ছেন মুমিনদের বন্ধু। Verily, among mankind who have the best claim to Ibrâhim (Abraham) are those who followed him, and this Prophet..." মুসলিম ব্যতিত মুমিন হওয়া যায় না। আল্লাহ ইচ্ছার কাছে আত্বসমর্পণকারি কে মুসলিম বলে। যেই সকল মানুষ তাদের সময়কালীন নবীদের অনুসরন করেছেন তারা সকলে মুসলিম। হযরত মুহাম্মদ এর পূর্বের সকল নবী, রাসূলগন তাদের পরে যে আরেকজন নবী আসবেন তা উল্লেখ করে গেছেন। প্রতিটি নবী,রাসূলগনের নিজস্ব শারীয়াহ বা বৈশ্বিক নিয়মাবলি ছিল। পরবর্তি নবীর আগমনে পূর্ববর্তী নবীর শরীয়ার কিছুটা পরিবর্তন, পরিবর্ধন থাকতো। ইসলামের মৌলিক উপাদান এক রেখে জীবন যাপনের নিয়ম কানুনের পরিবর্ধন । এক একজন নবী, রাসূলের মেয়াদকাল ছিল পরবর্তী নবীর আগমন কাল অবধি। যথা হযরত ইসা (দ:) কে কিংবা তাঁকে মেনে যেতে হবে যতদিন না হযরত মুহাম্মদ ( দ:) হেরা গুহায় নবুয়ত প্রাপ্ত হয়ে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া শুরু করেছিলেন। নবীজির নবুয়ত পাওয়ার সাথে সাথে হযরত ইসা (দ:) এর শারীয়া শেষ । কিন্ত নবীজির নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বের দিন পর্যন্ত যারা হযরত ইসা (দ:) এর শারীয়াহ মেনে চলেছেন তারা সকলেই মুসলমান। ওয়ারাকাহ ইবন নাওফেল ছিলেন এমন একজন ঈসায়ী মুসলিম যিনি নবীজীর নবুওত প্রাপ্তির পূর্বেই ইন্তেকাল করেন কিন্তু নবীজীর নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। নবীজীর পিতা ও মাতাও মূর্তি পূজা করতেন না। এখানে আরেকটি বিষয মাথায় রাখতে হবে । পূর্বের সকল নবী, রাসূলগন এসেছেন একটি বিশেষ গোষ্ঠি বা স্হানের জন্য কিন্তু হযরত মুহাম্মদ ( দ:) এসেছেন কিয়ামত অবধি সকল বিশ্বের জন্য। এখন কথা হচ্ছে এক এক সময় এক একজন নবী পাঠাবার কি দরকার ছিল, একজনকে পাঠিয়েই তো সব কিছুর শিক্ষা দেওয়া যেত!! এখানেই ইসলামের আরেকটি মারাত্বক তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আমরা অনেকেই গুরুত্ব দেই না কিংবা জানি না। আল্লাহ মানুষকে এক বিশেষ প্রকৃতিতে (ফিতরাত) সৃষ্টি করেছে। তার প্রকৃতি হল সে ক্রমে ক্রমে শিক্ষা লাভ করবে , বুদ্ধি, বিবেচনা করতে পারবে, সমাজ বদ্ধভাবে উন্নয়ন সাধনে ব্রত হবে। কোরানের সূরা নিসার ১১৯ এবং রুমের ৩০ নং আয়াতে এই ফিতরাতের কথা বলা হয়েছে। মানুষ তার নেচার অনুযায়ী ধীরে ধীরে বিভিন্ন আঙ্গিকে ব্যাপ্তী লাভ করবে, লয় হবে,ক্ষয় হবে। সেই কারনেই মানুষের Maturity অনুযায়ী তার নিকট স্তরে স্তরে দৈব শিক্ষা পাঠানো হয়েছে। আল্লাহ মানুষকে এজন্যই বানিয়েছেন, এটাই আল্লার ইচ্ছা। মানুষের মাঝে কাম, প্রবৃ্ত্তি থাকবে, দু:খ, আনন্দ থাকবে, সে ভুল করবে আবার সংশাধনের চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে সবাইকে মুসলিম করে দিতে পারেন। সেটা উনি করবেননা। "যে কেউ সৎপথে চলে, তারা নিজের মঙ্গলের জন্যেই সৎ পথে চলে। আর যে পথভ্রষ্ট হয়, তারা নিজের অমঙ্গলের জন্যেই পথ ভ্রষ্ট হয়। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কোন রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।" [ সুরা বনী-ইসরাঈল ১৭:১৫ ] "এখন আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করাব পৃথিবীর দিগন্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; ফলে তাদের কাছে ফুটে উঠবে যে, এ কোরআন সত্য। আপনার পালনকর্তা সর্ববিষয়ে সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট নয়? " [ সুরা হা-মীম ৪১:৫৩ ] এখন আরেকটি প্রশ্ন। তাহলে কি ইহুদি, খ্রীষ্টানরা হযরত মুসা ও ইসা (দ:) এর অনুসরনকারী নয়? যদি না হয় তা হলে তারা কি? উত্তর হচ্ছে না তারা ঐ দুই নবীকে অনুসরন করে নাই এবং করছেও না। প্রথমত যদি ইহুদীরা মুসা ( দ:) কে মানতেন তাহলে ইসা (দ:) এর আগমনের সাথে সাথে তারা ইসাকে নবী মেনে নিতেন অপরদিকে হযরত মুহাম্মদ (দ:) আগমনের সাথে সাথে সকলেই নবীজী কে মেনে নিতেন কারন প্রতিটি নবী, রাসুল পরবর্তী নবীর আগমন ও তাঁকে অনুসরন করতে বলে গেছেন। এখানে পুর্ববর্তী মানুষ গুলা তাদের সময়কালীন নবী, রাসূলগন যে আসমানী কিতাব পেয়েছিলেন তার অনেক বক্তব্য পরিবর্তন, বিকৃতি ও নষ্ট করে নিজেদের মনে যখন যা এসেছে তাই বসিয়ে দিয়েছে। কোরান তাদের ঐ অপকর্মের কথা উল্লেখ করেছে। "অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে। [ সুরা বাকারা ২:৭৯ ]" "অতঃপর যালেমরা কথা পাল্টে দিয়েছে, যা কিছু তাদেরকে বলে দেয়া হয়েছিল তা থেকে। তারপর আমি অবতীর্ণ করেছি যালেমদের উপর আযাব, আসমান থেকে, নির্দেশ লংঘন করার কারণে। [ সুরা বাকারা ২:৫৯ ]" অর্থাৎ বর্তমান বাইবেলগুলো প্রকৃত ইন্জীল নয় বর্তমান বাইবেলে প্রচুর পাদ্রীদের মনগড়া কথা লেখা আছে। =====তবর্ষে একটা ভুল অভ্যাস চালু আছে তাহলো নিজেদের " মোহামেডান" বলে পরিচয় দেওয়া। খ্রিষ্টান এসেছে ক্রাইস্ট তথা Jesus থেকে। ক্রাইস্টকে ওরা ঈশ্বরের পুত্র বলে এবং ধর্মটা ক্রাইস্ট প্রচলন করেছেন এই ধারনা থেকে বলা হয় খ্রিষ্টবাদ কিন্তু ইসলাম হযরত মুহাম্মদ ( দ:) প্রচলন করেন নাই এবং মুহাম্মদবাদ না। ইসলাম আল্লাহ প্রেরিত দ্বীন, দ্বীনাল্লাহ। মোহামেডান বললে আল্লাহর সাথে নবীজীকে তুলনা তথা শিরক করা হয়। …… আল্লাহর হুকুম যেই পালন করবে সেই মুসলিম। আল্লাহর দুই প্রকারের হুকুম রয়েছে। একপ্রকার হুকুম যার অবাধ্য হবার কোন উপায় নাই। ফেরেশতাগন, সমগ্র বিশ্ব প্রকৃতি, চাঁদ, সূর্য, পশু, পাখি এমনকি আমাদের সমগ্র অঙ্গ,প্রত্যঙ্গ, ছোট্ট মানব শিশুটিকেও জাতগতভাবে আল্লাহর হুকুমকে পালন করতেই হবে সেই অর্থে এরা সকলেই মুসলিম। কেবল মাত্র বিবেক জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ ও জ্বীন জাতিকে নিজেদের ইচ্ছায় আল্লার হুকুম পালন করে মুসলিম হতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখেনা প্রতিটি মানব শিশুই মুসলিম হিসাবে জন্মগ্রহন করে তা সে যেই ধর্মের পরিবারে বা স্হানেই জন্মগ্রহন করুক না কেন। এক বেশ্যার শিশুও মাসুম মুসলিম হিসাবেই দুনিয়াতে আসে। তাই ইসলামে জারজ সন্তান বলে কিছু নাই।

Comments