সূরা লোকমানের ১০ নং আয়াতটির সর্বশেষ প্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।
- islamipedia1122
- Apr 23, 2019
- 3 min read

“তিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন; তোমরা তা দেখছ। তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে এবং এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্বপ্রকার জন্তু। আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছি, অতঃপর তাতে উদগত করেছি সর্বপ্রকার কল্যাণকর উদ্ভিদরাজি।(৩১:১০)।
****
কোরআনের এই আয়াতটিতে দুটি অংশ রয়েছে
====
“তিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন; তোমরা তা দেখছ।”
………..
এই আয়াতটির প্রথমাংশটি, “ “তিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন; তোমরা তা দেখছ ” বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে দারুন তাত্পর্যপূর্ণ একটি কথা। সাধারণত খুঁটির কাজ হচ্ছে কোন জিনিষের ভর ধরে রাখা। আমাদের পৃথিবীর পরিবেশের বাহিরে বিশ্ব জগতের যে সবকিছু বিদ্যমান রয়েছে তাকে আমরা পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে খোলা চোখে আকাশের মত দেখি যা কোরআন পাকের ২:২৯ নং সূরাতেও বর্নিত রয়েছে। এই আয়াতটির মর্মবানিটি যে জিনিষ টি পরিষ্কার রূপে বর্ননা করছে যে বিশ্বের যাবতীয় বিদ্যমান সকল বস্তগুলির একটি ভর আছে যেটি ১১শ শতকে আল-বেরুনি বলেছিলেন, পরবর্তিতে কোরআন নাযিলের প্রায় ১২০০শ বছর পরে নিউটোনিয়ান ল আব গ্রাভিটেশনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়।আমরা জানি যে, "এই মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে এবং এই আকর্ষণ বলের মান বস্তু কণাদ্বয়ের ভরের গুণ ফলের সমানুপাতিক, এদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক এবং এই বল বস্তুদ্বয়ের কেন্দ্র সংযোজক সরলরেখা বরাবর ক্রিয়া করে।"
বিশ্বের সকল কিছু একটি আরেকটির সাথে গ্রাভিটেশনের কারনে সংঘর্ষে যাচ্ছে না কারন প্রতিটি বস্ত এক সুচারু মাত্রায় স্ব স্ব অক্ষে ঘুর্নায়মান যাকে অপকেন্দ্র বল বলে। ঘুর্ণায়মান বস্তুর উপর কেন্দ্র বহিমুখি যে বল ক্রিয়া করে তাই অপকেন্দ্র বল। এ থেকে অনায়াসেই বোঝা যায় এই মধ্যাকর্ষন ভর ( gravitational force) কে অপকেন্দ্র ভর ( centrifugal force) এর মাধ্যমে যেভাবে ব্যালেন্স করা হচ্ছে তথা সব কিছু হুরমূর একটি সাথে আরেকটির সংঘর্ষ হচ্ছে না সেটাই কোরআনে বর্নিত,
“খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী”।
আল্লাহর পরিচালিত নিয়মাধীন সূর্য ও চন্দ্রের বিষয়টি আবার কোরআনের ৭:৫৪ তে বর্ননা করে হয়েছে।
আমাদের বোঝা উচিত এই কোরআন যে সময় নাযিল হয়েছিল সে সময় মধ্যাকর্ষন এবং অপকেন্দ্র ভরের এই ব্যালেন্সিং সম্মন্ধে মানুষের কোন জ্ঞান ছিল না। এই gravitational and centrifugal force দ্বারা অদৃশ্য পিলার কোরআনে বর্নিত হবার প্রায় ১২০০ বছর পর বিজ্ঞানিগন জানতে পারেন। কোরআনের বিভিন্ন স্হানে এইরূপ দূর্দান্ত আয়াত সমূহ (Sign) অত্যান্ত গুরুত্ব বহন করে বৈকি।
==
“তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে..”
পৃথিবীর পাহাড় গুলি গঠন ও তাদের পরিসর ( Ranges) দারুন বেড়ি (Chains) দিয়ে ঘিরে রেখেছে। এই পরিসর আগুয়ান হয়ে সাগর, সমুদ্রের ভিতর দিয়ে বিভিন্ন সাগরের মাঝের বিভিন্ন Island এর মাধ্যমে পৃথিবীকে বেড়ি দিয়ে রেখেছে। যেমন একটি পাহাড়ি বেষ্টন ভূমধ্যসাগরের উপকূল দিয়ে এশিয়া মাইনর, ভারত, মায়ানমার অবধি পরিসিমা বা Range এর আওতায় রয়েছে তদ্রুপ East Indies Islands এর মাধ্যমে উত্তর দিকে যেয়ে Aleucien দ্বিপসমূহকে বেষ্ঠন করে এবং দক্ষিনে Pacific দ্বিপ সমূহ দিয়ে New Zealand কে যুক্ত করে যা আবার বর্তমানের এনটার্টিকা Ranges তাক ব্যাপ্ত বা প্রসারিত।
তারপর আবার দক্ষিন আমেরিকার Andes উপকূলের দিকে গিয়ে সেখান থেকে উত্তর আমেরিকার Coast range ( সমুদ্র উপকূল) পর্যন্ত বেড় দিয়ে রেখেছে।
আবার প্রশান্ত মহাসাগরের সাগর পর্যন্ত সীমানাতে গেছে এই ভাবে এই পাহাড়ি বেষ্টন (Encircle) পৃথিবিকে ঘিরে রেখেছে।
আবার অন্য দিকে একই ভাবে Eurasia হতে একই প্রক্রিয়ায় Pyrenees দিয়ে Pamir হয়ে মধ্যপোসাগর হয়ে Black Sea হয়ে Persian Gulf coast পর্যন্ত এগিয়ে গেছে। এইরূপ পরিকল্পনায় পৃথিবীর সকল পর্বতমালার Ranges বিস্তারিত ভাবে পর্যালাচনা করলেই বিষয় টি পরিষ্কার হয়ে আসে। তাই বলা যায় পৃথিবীর পর্বতরাজী পৃথিবিকে চারিদিক দিয়ে ( Encircled) দৃঢ়ভাবে ধরে রেখেছে।
পাহাড়ের সৃষ্টি হয় পৃথিবীর ভূপৃষ্টের নীচে যে বিভিন্ন Plates আছে তাদের শেষ সীমানা হতে। এ গুলি কে বলে ‘Plate tectonics’ এগুলি ভুপৃষ্টের নীচে lithosphere এ রয়েছে। এই Plates গুলির boundary তথা প্রান্ত সীমা যখন একে ওপরে উপর উঠে যায় বা সংঘর্ষ হয় তখন ভুমিকম্প হয় আর এই ভূমিকন্প সাগরের নীচের ভূপৃষ্ঠে হলে সুনামি হয়ে যায়।
প্রথমে আলোচনা করা হল যে কিভাবে পর্বতরাজি কিভাবে পৃথিবিকে বেষ্টন করে আছে কিন্তু এই পর্বতরাজি পৃথিবীতে ভূপৃষ্ঠের নীচে যে সকল Plates রয়েছে তাদের প্রান্ত সীমা হতে সৃষ্টি হয়। Plates গুলি হলো:
Eurasian plate।
Arabian plate
Australo-Indian plate
Antarctica plate
আবার অন্য রকম কিছু প্রক্রিয়ার plates রয়েছে যেগুলো কে বলা যায় প্রশান্ত মহাসগরে টেকটোনিক Plate, উত্তর ও দক্ষিন আমেরিকান Plate। আবার অন্য ভিন্ন কি ধরনের Plate ও আছে যেগুলি সম্মন্ধে কোরআনের ৭:৯১ তে hints আছে।
পর্বতসমূহ খুবই দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে, কারন এদের খুবই শক্ত ভিত রয়েছে।কারন পৃথিবীর বাহিরে crust বা shell বা খোল সাগরের নীচের ভূপৃষ্ঠে প্রায় ৫ কিলোমিটার গভীরে আর সমতল ভূমির প্রায় ৩৫ কিলোমিটার গভীর যা আবার কোন কোন বিঁশাল পর্বতগুলোর প্রায় ৮০ কিলোমিটার নীচ হতে উঠে আসে। এথেকেই ধারনা করা যায় পর্বত সমূহ কতটা দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে
Comentarios