top of page

দর্শন, বিজ্ঞান ও ধর্ম (প্রথম পর্ব)

  • Writer: islamipedia1122
    islamipedia1122
  • Feb 21, 2019
  • 5 min read

Updated: Feb 22, 2019

========

প্রকৃত পক্ষে ইসলাম কে ধর্ম না বলে দ্বীন বলা যুক্তি সংগত কারন ধর্ম বা religion দ্বারা যা বোঝানো হয় কোরানীয় দ্বীন তা থেকে ভিন্ন।আমাদের ব্যবহ্নত প্রতিটি শব্দের একটা প্রচলিত আক্ষরিক অর্থ হয় যাকে denotation বলে কিন্ত ঐ শব্দের একটি জন্মগত ঐতিহাসিক ( connotation ) অর্থ আছে। …….


যেমন ধরা যাক। মীরজাফর সিরাজউদ্দৌলার সাথে বেইমানি করেছিল। এই খানে মীরজাফরকে একজন ব্যাক্তি হিসাবে প্রকাশ করাহচ্ছে। এটা denotation। কিন্তু যদি বলা হয়, ‘ আপনি একটা মীরজাফর সেক্ষেত্রে মীরজাফর শব্দটি হয়ে পরে বহুমাত্তিৃক। এটা connotation । আবার প্রতিটি শব্দের জ্ঞানতাত্বিক একটা বিষয় আছে যাকে বলে etymological significance। অর্থাৎ শব্দটি কোন পরিবেশ, পরিস্হিতিতে চালু হয়ে ছিল সেই অবস্থানের নিরিখে শব্দটির একটা জন্মগত অর্থ ভাব বহন করে । যেমন রাজাকার। রাজাকার শব্দটির আক্ষরিক অর্থ সাহায্যকারী কিন্ত এর ভাবার্থ সম্পূর্ন ভিন্ন।

…………


আমি এই সুযোগে আরো কিছু কথা বলতে চাই। আমাদের দেশে বেশ কিছু একেবারে হিন্দু ধর্মীয় শব্দ কে প্রবেশ করানো হয়েছে। মঙ্গল শোভা যাত্রা, আল্পনা, বটমূল, উপাচার্য ইত্যাদি।

………..

মঙ্গল’ শব্দটি পুর্তিপূজকদের কাছে এক দেবতা তথা ‘মঙ্গলদেবতা’র নাম। মঙ্গল হল যৌনতা, যুদ্ধ এবং শক্তির দেবতা। হিন্দু ধর্মে মঙ্গলশব্দটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেমন- মধ্যযুগে হিন্দুধর্মীয় আখ্যান কাব্য মঙ্গলকাব্য নামে পরিচিত। বলা হয়ে থাকে, যে কাব্যে দেবতার আরাধনা, মাহাত্ম্য-কীর্তন করা হয়, যে কাব্য শ্রবণেও মঙ্গল হয় এবং বিপরীতে হয় অমঙ্গল; যে কাব্য মঙ্গলাধার, এমন কি, যে কাব্য ঘরে রাখলেও মঙ্গল হয় তাকে বলা হয় মঙ্গলকাব্য বলে। মঙ্গলকাব্য আবার তিন শাখা- মনসামঙ্গল, চন্ডীমঙ্গল ও অন্নদামঙ্গল। এছাড়া- হিন্দুরা পূজার সময় যে পাত্র ব্যবহার করে তাকে মঙ্গলঘট বলে। বিশেষ পূজার জন্য যে প্রদীপ ব্যবহার করে তাকে মঙ্গল প্রদীপ বলে। পূজার সময় মঙ্গলপ্রদীপ ঘুড়িয়ে যে আলোর বিচ্চুরণ করা হয় তাকে মঙ্গল আরতি বলে। হিন্দু ধর্মে একটা পূজাই আছে যার নাম মঙ্গলপূজা হিন্দু বিয়ের প্রথম আচারের নাম হচ্ছে মঙ্গলাচরণ হিন্দুদের বিয়ের সময় সূর্য্যোদয়ের আগে বর ও কন্যাকে চিড়ে ও দৈ খাওয়ানো হয় তাকে দধিমঙ্গল বলে মঙ্গলশোভাযাত্রাও তেমনি হিন্দুদের একটি ধর্মীয় যাত্রা। বিশেষ করে জন্মাষ্টমীর সময় হিন্দুরা মঙ্গলশোভাযাত্রা বের করে এটা প্রায় সর্বত্রই দেখা যায়।

……

আর্যদের আগমনের অনেক আগে থেকেই বাংলায় যেসব লৌকিক দেবতার পূজা হতো কিংবা ব্রত-পাঁচালির অনুষ্ঠান হতো,তাতে মাঝ উঠোনে আল্পনা এঁকে আসন সাজিয়ে শুরু হতো অনুষ্ঠান। আলপনা /বিশেষ্য পদ/ চাউলের গোলা দিয়া মন্দির মেঝে পিঁড়ি গৃহ দেওয়ালে অঙ্কিত মাঙ্গল্য চিত্র। একজন মুসলমান জায়নামাজে পা রাখলে তার যে অনুভূতি হবে একজন হিন্দুর আল্পনার উপর হেঁটে গেল তার ধর্মীয় অনুভূতির সৃষ্টি হবে। মসজিদ কিংবা মন্দির যেরূপ কেবল Architecture নয় তদরুপ আল্পনা কেবল চিত্রশীল্প নয়।

…….

মাওলানা, খতীব যেমন ইসলাম শিক্ষায় শিক্ষিত আলেমদের ইসলামী শাস্ত্রের উপাধী তেমন আচার্য, উপাচার্য হীন্দু শাস্ত্র বিদ্যার উপাধি।

………

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা বড় বট গাছকে অক্ষয় বট নামে অভিহিত করা হয়। সকল দেশের সনাতন ধর্মে বড় গাছের পূজা করার রীতি লক্ষ্য করা যায়। ভারতবর্ষে বটগাছ ছাড়াও তুলসি, অশ্বত্থ গাছের পূজার চল আছে। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে, দশরথের প্রেতাত্না সীতাদেবীর হাত থেকে চালের অভাবে বালুকার পিণ্ড গ্রহণ করেছিলেন। এর সাক্ষী ছিল ফল্গুনদী, তুলসী গাছ ও অক্ষয়বট । রামচন্দ্র ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে যখন ফল্গুনদী ও তুলসী গাছকে প্রশ্ন করেন, তখন তারা মিথ্যা কথা বলে। ফলে সীতাদেবী তাদের অভিশাপ দেন। কিন্তু অক্ষয়বট সত্য কথা বলায়, সীতাদেবী তাকে আশীর্বাদ করেন । কুরুক্ষেত্রের প্রাঙ্গনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক অর্জুনকে গীতা দানের সাক্ষী আজও হয়ে আছে সেখানে অক্ষয় বট। সনাতন হিন্দু ধর্মমতে তীর্থের বৃহৎ বটগাছে জল দিলে এবং পূজা করলে মনষ্কামনা পূর্ণ হয়।

………….

ধর্ম শব্দের আগমন সংস্কৃতি থেকে । উৎপতিগত অর্থে ধর্ম হচ্ছে বেদ,বেদান্তের নীতি অনুসরন করা। “ এই আদিত্য সূর্যের পরমপদে যে মধুর উৎস সেই মধুই ধর্ম” ( সামবেদ- পর্ব ১৪)। ইসলাম কিন্তু তা বলে না। Religion শব্দটি এসেছে ল্যাটিন religio থেকে । খ্রীষ্ট পূর্ব প্রথম শতাব্দীতে এর উৎপত্তি । Religio মানে পুর্বপূরুষের ঐতিহ্যেকে ধরে রাখা (traditional cultus)।

…….

তো দেখা যায় উৎপত্তিগত অর্থে ধর্ম বা Religion, কোরান বর্নিত দ্বীনের মর্মার্থ হতে অনেক আলাদা।

০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০ যাহোক মূল কথায় আসা যাক। র বাইরে যেয়ে আবহাওয়া বিদ্যার সাহায্যে ঐ যুক্তিকে ভুল প্রমানিত করে দিতে পারে। অর্থাৎ সব বর্ষায় বৃষ্টি হয় বলে সামনের বর্ষায় বৃষ্টি হবে এটা ঠিকক না। ……… এই দুই বিদ্যায়ই মূলত দর্শনের পাঠাগার। এই যুক্তিবিদ্যা (reasoning) হচ্ছে বর্তমান জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রধান মাধ্যম। যুক্তিবাদের কষ্টি পাথরে যাচাই করা ব্যতিরেক কোন কিছুকে মেনে নেওয়াকে মূর্খতা, পশ্চাদপদতা হিসাবে ধরা হয় যেখানে আবেগের কোন স্হান থাকতে পারবেনা। মোদ্দা কথা আবেগ, ভালবাসা, বিশ্বাস বর্জন করে বুদ্ধি নির্ভর হতে হবে।

………..

যুক্তিবাদ (লাতিন ভাষা ratio তথা " কারণ " বিশ্লেষন ) একটি দার্শনিক গতির অনুমানের উপর ভিত্তি করে যা, মানবিক যুক্তির সমস্ত জ্ঞানের মূলনীতির উৎ‍স। জ্ঞানতত্ত্বে এবং আধুনিক অর্থে যুক্তিবাদকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়ঃ ১/ একটি দৃষ্টিভঙ্গী যা যুক্তিকে জ্ঞানের উৎস ও সত্য প্রতিপাদনের একমাত্র মাধ্যম মনে করে। ২/একটি তত্ত্ব যেখানে সত্যের মানদন্ড ঐন্দ্রিক নয়, বরং বৌদ্ধিক( Intellectual) এবং অবরোহী (Deductive)। তাই বলা হয় জ্ঞান হচ্ছে যুক্ত নির্ভরতা এবং পক্ষপাত বিহিন চিন্তা। এ দুটো অর্থাৎ যুক্ত নির্ভরতা এবং পক্ষপাত বিহিন চিন্তা একজন মানুষকে আধুনিক মুক্তচিন্তার অধিকারি করে তোলে।

………….

আমি আশা করি Western আধুনিকতা কি বুঝাতে পেরেছি। এবার আসেন তাদের যুক্তি দ্বারাই তাদের জ্ঞান ভান্ডার কে বিশ্লেষন করা যাক।

……….


যুক্তি বিদ্যার অসারতা।


————————-

Ruth M.J.Byrne, FTCD, MRIA একজন প্রখ্যাত আইরিশ cognitive বিজ্ঞানি। cognitive বিজ্ঞান কি ? Cognition এর যুৎসই বাংলা নাই। এটা হচ্ছে মানুষ বুঝে,চিন্তা করে, অভিজ্ঞতা বলে, তার পন্চঙ ইন্দ্রিয় দ্বারা আহরিত তথ্য, Data সমস্ত কিছু সন্নিবেশিত করে যে মানষিক কার্যক্রম পরিচালনা করে সেটা হচ্ছে মানুষের cognition। বিজ্ঞান study করে মানুষের ধারনা সমুহ কিভাবে তৈরি হয় এবং কোন প্রক্রিয়ায় সে যুক্তি প্রদান করে। এই ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞান (মনের একটি অধ্যায়), স্নায়ুবিজ্ঞান (মস্তিষ্কে জৈবিক গবেষণা), কম্পিউটার বিজ্ঞান (প্রোগ্রাম এবং কম্পিউটার নির্মাণ) এবং ভাষাবিদ্যা (ভাষা অধ্যয়ন) সম্ননয়ে কোন একটি নির্দিষ্ট সমস্যার উত্তর জানার প্রয়াস পায় ।

……….

এই বিদ্যায় পারদর্শি Ruth M.J. Byrne । তিনি বেশ কিছু তথ্যবহুল বই ও লিখেছেন যেমন, “ The Rational Imagination: How People Create Alternatives to Reality (2005, MIT Press)” “ Deduction (1991) ইত্যাদি । তিনি বলছেন, “ মানুষ নীতিগত ভাবে নিরপেক্ষ কিন্তু ব্যবহারিক জীবনে ভ্রমাত্বক এবং “ বিভিন্ন কারনে তাদের কর্মকান্ড সীমিত” ( Humans are rational in principle but they err in practice” and “their performance is limited by various factors) যে বই থেকে এই বক্তব্য টা তুলে ধরা হল সেই বইটা হচ্ছে, ( 'If' and the problems of conditional reasoning. Trends in Cognitive Sciences).


..

অপর এক প্রখ্যাত ব্রিটিশ দার্শনিক যিনি প্রায় চল্লিশটি বইয়ের লেখক , একজন অক্সফোর্ড ফেলো, তিনি বলছেন, “ নির্মোহ যুক্তিতত্বে ভাল হতে হলে তাকে আবেগ হতে মুক্ত থাকতে হবে, ব্যাক্তিগত অনুভূতি ও তারনা মুক্ত হতে হবে। যে কোন মূল্যায়নে বা বিশ্লেষনে সঠিক যুক্তিবাদী হচ্ছে সে যে সম্পূর্ন বিষয় কেন্দ্রীক , যৌক্তিক, এবং “ যান্ত্রিক”। যদি মুক্তমনাদের এই নুন্যতম মানসিক বৈশিষ্ট্যের কমতি দেখা যায় যথা সামান্য ব্যাক্তিগত আবেগ, অনুভূতি, তারনা বা সাংস্কৃতিক,নৈতিক নিয়মাবলী এবং ধারনা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যায় সেক্ষেত্রে তার সকল প্রকার বিষয়ভিত্তিক যুক্তি বিশ্লেষন এই সকল তারনা দ্বারা পক্ষপাত দুষ্ট হবার কারনে অযৌগিত হয়ে যাবে ।” (“Rationality is that a good rationale must be independent of emotions, personal feelings or any kind of instincts. Any process of evaluation or analysis, that may be called rational, is expected to be highly objective, logical and “mechanical”. If these minimum requirements are not satisfied i.e. if a person has been, even slightly, influenced by personal emotions, feelings, instincts or culturally specific, moral codes and norms, then the analysis may be termed irrational, due to the injection of subjective bias.-A.C.Grayling, A Famous Philosopher)

…….

মজার ব্যাপার হচ্ছে এই cognitive বিজ্ঞান ও স্নায়ুবিজ্ঞান বা neuroscience মতে কোন মানুষের পক্ষেই আবেগ,অনুভূতি বিহীন যান্ত্রিক মস্তিষ্ক হয়া সম্ভব নয়। মানুষের মষ্তিষ্কের ভিতরে একটা অংশ আছে যাকে বলে এমিকঢালা ( amygdala) Human brain এর এই amygdala থেকেই আবেগ, অনুভূতির সৃষ্টি হয় অর্থাৎ জৈবিকভাবেই মানুষ আবেক, অনুভূতি সমপন্ন জীব। সেক্ষেত্রে দেখা যায় perfect যুক্তিবাদী মুক্তমনা হতে গেলে তার মস্তিষকের amygdala নষ্ট থাকতে হবে অর্থাৎ তাকে psychopath তথা পাগল হতে হবে।

……….

অর্থাৎ তথাকথিত আধুনিক মুক্তমনা, সঠিক যুক্তিবাদী হওয়ার পশ্চিমী প্রপাগান্ডা মানুষকে আমানুষ করার ভ্রান্তপথ



Hozzászólások


2019 by Islamipedia.

  • White Facebook Icon
  • White Instagram Icon
  • White Pinterest Icon
  • White Twitter Icon
  • White YouTube Icon

Join our mailing list

Never miss an update

bottom of page